রসায়ন বিজ্ঞান

দ্রবণ ও দ্রাব্যতা

দ্রবণ সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি পড়েছি। দ্রবণের অনেক উদাহরণ আমাদের চারপাশেই রয়েছে। যেমনঃ চিনির সরবত। দ্রবণ নিয়ে বিস্তারিত পড়ার পূর্বে আমরা দ্রবণ সম্পর্কীত কিছু তথ্য জেনে নেইঃ
দ্রাবকঃ যে  তরল পদার্থ দ্রব্য কে দ্রবীভূত করে তাকে দ্রাবক বলে। যেমনঃ জল, ইথানল, বেনজিন ইত্যাদি।
দ্রব্যঃ যে পদার্থ দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রব্য বলে। যেমনঃ লবন, চিনি,বেকিং সোডা ইত্যাদি।
দ্রবণঃ  দ্রাবক এবং দ্রব্যের মিশ্রণ কে দ্রবণ বলে। দ্রবণ প্রধানত ২ প্রকারঃ
১.সমসত্ত্ব দ্রবণঃ স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমান দ্রাবক যে পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে সক্ষম ঠিক সেই পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে যে দ্রবণ তৈরী করে তাকে সমসত্ত্ব দ্রবণ বলে।
২. অসমসত্ত্ব দ্রবণঃ  স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমান দ্রাবক যে পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে সক্ষম তার চেয়ে কম পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে যে দ্রবণ তৈরী করে তাকে অসমসত্ত্ব দ্রবণ বলে। অর্থাৎ, সমসত্ত্ব দ্রবণ প্রস্তুত করতে যে পরিমান দ্রব্য প্রয়োজন তার চেয়ে কম দ্রব্য দ্বারা দ্রবণ প্রস্তুত করলে তাকে অসমসত্ত্ব দ্রবণ বলে।
দ্রাব্যতাঃ প্রতি ১০০ গ্রাম দ্রাবকে পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরী করে তাকে ঐ দ্রব্যের দ্রাবতা বা Solubility বলে। একে S দ্বারা প্রকাশ করা হয়। M  ভরের কোন দ্রবণে যদি দ্রব্যের ভর m হয় তাহলে,দ্রাবকের ভর =   দ্রবণের ভর – দ্রব্যের ভর = M-m
অতএব, দ্রাব্যতা S=100×mM-m ———-(1)
দ্রাব্যতার প্রভাবকঃ 
১.তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে দ্রাবকের আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং ঘনত্ব হ্রাস পায়, ফলে দ্রবক অধিক পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে পারে। অর্থাৎ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে দ্রাব্যতা বৃদ্ধি পায়।তবে তাপোৎপাদী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে তাপ বৃদ্ধিতে দ্রাব্যতা হ্রাস পায়।
২.দ্রব্য কঠিন বা তরল হলে এর দ্রাব্যতার উপর চাপের তেমন কোন প্রভাব নেই। তবে গ্যাসীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রের চাপের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এ সম্পর্কে বিজ্ঞানী হেনরি একটি সুত্র প্রদান করেন।সূত্রটি নিম্নরূপঃ
 তরল দ্রাবকে বিক্রিয়া বিহীন গ্যাসীয় দ্রব্যের দ্রাব্যতা এর উপর প্রযুক্ত চাপের সমানুপাতিক। 
অর্থাৎ, চাপ বৃদ্ধি করলে অধিক পরিমান গ্যাস তরলে দ্রবীভূত হয়।
দ্রাব্যতা S এবং চাপ P হলে, Spro→P
                                            S=kP  ——— (2)
এখানে k হেনরির ধ্রুবক।
জ্ঞান মূলক প্রশ্নঃ ” 25oC তাপমাত্রায় NaCl  এর দ্রাব্যতা 36″ — ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ 25oC তাপমাত্রায় NaCl  এর দ্রাব্যতা 36″ বলতে বোঝায় যে, 25oC তাপমাত্রায় 36 গ্রাম NaCl  লবন দ্রবীভূত হয়ে NaCl এর সম্পৃক্ত দ্রবণ প্রস্তুত করবে। অন্যভাবে বললে, 25oC তাপমাত্রায় 100 গ্রাম জল 36 গ্রাম NaCl  কে দ্রবিভূত করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *