ভারতের সংবিধান সংশোধন
ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মোট তিনটি পদ্ধতি আছে । আজ পর্যন্ত ভারতীয় সংবিধানের বিভিন্ন অংশ সংশোধিত হয়েছে ১০৫ -এর অধিক বার । কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংবিধান সংশোধনী নিম্নে বর্ণিত হল —
I. ১৯৫১ সালে ভারতীয় পার্লামেন্টে পাশ হয় প্রথম সংবিধান সংশোধনী, সংবিধানে সংযুক্ত হয় নবম তফসিল ।
II. ১৯৬০ সালে দশম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে, পর্তুগীজ অধিগৃহীত দাদরা ও নগর হাভেলী ভারতের অন্তর্ভূক্তিকরণের পরে তাদের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা প্রদান করা হয় ।
III. ১৯৬২ সালে দ্বাদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে,, পর্তুগীজদের অধীনতা থেকে মুক্ত গোয়া, দমন ও দিউ -কে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা প্রদান করা হয় ।
IV. ১৯৬২ সালে ত্রয়োদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে নাগাল্যান্ডকে একটি পৃথক অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা প্রদান করা হয় ।
V. ১৯৭৫ সালে ৩৬ – তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সিকিম ভারতের ২২ – তম অঙ্গরাজ্যের স্বীকৃতিলাভ করে ।
VI. ১৯৭৬ সালে পাশ হয় ৪২ – তম সংবিধান সংশোধনী, যাকে বলা হয় ‘মিনি রিভিশন অফ ইন্ডিয়ান কনস্টিটিউশন’ । এই সংশোধনীর মাধ্যমে গৃহীত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন —
● প্রস্তাবনা – প্রস্তাবনায় উল্লিখিত ‘সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র’ কথাগুলির সাথে নতুন দুটি শব্দ ‘ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতান্ত্রিক’ যুক্ত করা হয় । প্রস্তাবনার শেষাংশে ‘জাতীয় সংহতি’ এই শব্দদুটির সাথে ‘ সংহতি’ শব্দটি যুক্ত হয় ।
● নির্দেশাত্মক নীতি – এই নীতির ক্ষেত্রে কিছু নতুন নির্দেশাত্মক নীতি ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভূক্ত করা হয়, সেগুলি হল —
(ক) শিল্পে শ্রমিকদের প্রশাসনে অংশগ্রহণের সুযোগ দান,
(খ) পরিবেশ রক্ষা,
(গ) দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান । নির্দেশাত্মক নীতিকে মৌলিক অধিকারের তুলনায় বেশি গুরুত্ব প্রদান ।
● মৌলিক দায়িত্ব – (সংখ্যায় মোট ১০ টি) এর ধারণা অন্তর্ভূক্ত হয় ভারতীয় সংবিধানে । (বর্তমানে ১১ টি)
VII. ১৯৭৮ সালে, ৪৪- তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ‘সম্পত্তির অধিকার’, মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বহির্ভূত হয় ।
VIII. ১৯৮৫ সালে, ২২-তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে পাশ হয় ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন’, অন্তর্ভূক্ত হয় দশম তপশিল ।
IX. ১৯৮৯ সালে ভোটাধিকারলাভের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যুনতম বয়স ২১ থেকে কমিয়ে ১৮ করা হয় ।
X. ২০০২ সালে ৮৬- তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের পার্ট – থ্রিতে ২১(ক) অনুচ্ছেদে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোর কিশোরীদের শিক্ষার অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করা হয় এবং সংবিধানের পার্ট -ফোর (এ) -এর ৫১(ক) অনুচ্ছেদে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের জন্য ৬ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত কিশোর কিশোরীদের শিক্ষার সুযোগ প্রদান করাকে একাদশতম মৌলিক কর্তব্যের স্বীকৃতি প্রদান করা হয় ।