আর্যভট্ট ও ভারতীয় গণিত

ভারতীয় গণিতের ঊষালগ্নে

আর্যভট্ট ছিলেন গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

পৃথিবীর আহ্নিক গতির কথা অন্তত ভারতে তিনিই প্রথম বলেন। ভারতীয় গণিতের ঊষালগ্নে তাঁর আবির্ভাব। যে কয়জন ভারতীয় মনীষীর অবদানে সে কালের গণিত সমৃদ্ধ হয়েছে, যা আজকের গণিতেরও অভাবনীয় উন্নতির মূলে, তিনি তাঁদের প্রথম সারির একজন। তিনি গুপ্ত যুগে আর্যভটিয়া এবং আর্য-সিদ্ধান্তের মতো বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

আর্যভট্টই প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানের গ্রন্থের সঙ্গে গণিত অধ্যায় সংযুক্ত করেছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান যে গণিতনির্ভর, এ বিষয়ে তিনি অবহিত ছিলেন।
বীজগণিতে অজ্ঞাত রাশি বোঝাতে আর্যভট্ট “গুলিকা” এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। সপ্তম এবং তৎপরবর্তী শতাব্দীতে সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে “অব্যক্ত” শব্দটি।
সব দিক বিবেচনা করে বলা যায় আর্যভট্টই বীজগণিতের প্রথম প্রবক্তা। এ কথা সত্য প্রকাশ অকাট্য যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন তাঁর “ফাউন্ডার্স অফ সায়েন্স ইন এনশিয়েন্ট ইন্ডিয়া” গ্রন্থে।

আর্যভট্টের অবিস্মরণীয় অবদান তিনটি: প্রথম, অনির্ণেয় সমীকরণ বা দিওফানতীয় সমীকরণের সমাধান, দ্বিতীয় π (পাই)-এর মান নির্ণয়, আর তৃতীয় ত্রিকোণমিতির আলোচনা ও সাইন তালিকার প্রস্তুতি। আর্যভট্টের জ্যামিতি বা পরিমিতি বিষয়ক আলোচনা এমন কিছু উল্লেখযোগ্য নয়।

বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোচনা ভারতে শুরু সম্ভবত 499 খ্রিঃ থেকে কুসুমপুর (অধুনা পাটলিপুত্র বা পাটনা) আর্যভট্ট এখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানে অধ্যাপনা করতেন। তাঁর শিষ্যদের মধ্যে পাণ্ডুরঙ্গ স্বামী, লতাদেব এবং নিঃশঙ্ক বিশেষ উল্লেখের অপেক্ষা রাখে। জ্যোতির্বিজ্ঞানে আর্যভট্টের অবদান দুইটি ধারা ঔদয়িকা আর অর্দ্ধ রাত্রিকার প্রবর্তন। প্রথমটির মতে দিনের শুরু “লঙ্কায়” সূর্যোদয়ের সাথে; আর দ্বিতীয়টির মতে এই দিনের শুরু গড় মধ্যরাত্রি থেকে।